প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ এ ৮:১৫:১০ AM

লেখক: আফিফা জাহান পুষ্প

প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। মৌলিক মানবাধিকারগুলো মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো শিক্ষা।  একটি শিক্ষিত জাতি বিশ্ব উন্নতিতে নিজেদের অবদান রাখতে পারে কিন্তু একটি শিক্ষিত জাতি গড়তে হলে এর প্রথম শর্ত হলো শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ইউনেস্কোর মত অনুযায়ী মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করা উচিত। কিন্তু সে তুলনায় শিক্ষাখাতে বরাদ্দকৃত অর্থ বরাবর দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। দেশের শিক্ষা স্তরকে যদি কয়েকভাগে ভাগ করা যায় তার মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত সেক্টরগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রাথমিক আর ইবতেদায়ী। একজন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষার ধাপ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। কিন্তু সে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোনো শৃঙ্খলা নেই কোনো জবাবদিহিতা।যার কারণে অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানেরা সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ান না।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা কেন তাদের সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ান না  এক গবেষণায় উঠে এসেছে,প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের ভর্তি করান না বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা, দেশের বিভিন্ন  জেলা পর্যায় কিছুটা আধুনিকতার ছাপ দেখা গেলেও গ্রামে, ইউনিয়ন পর্যায় তা ভিন্ন চিত্র।একই শ্রেণিকক্ষে অধিক ছাত্র- ছাত্রী থাকার কারণে প্রতিটি  শিক্ষার্থীর কাছে সঠিকভাবে পাঠ মূল্যায়ন শিক্ষকের কাছে সীমিত সময়ে কষ্ট সাধ্য হয়ে উঠে।সাপ্তাহিক ও মাসিক পরীক্ষা না থাকা, শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা না থাকা, পরিবহনসেবা না থাকাও উল্লেখযোগ্য কারণ। এ সকল সমস্যা শুধু  দেশের সাধারণ জনগণ ও এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের আস্থা হারাচ্ছে। সমস্যা নিরুপণে প্রয়োজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিত নিশ্চিত এবং যথাযথ জবাবদিহিতা, ছাত্র অনুপাতে শিক্ষক বাড়ানো, নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক নিয়োগ অফিস সহকারী নিয়োগ, বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর, গেট স্থাপন,পরিবহনের ব্যবস্থা করা,দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা কাউন্সেলিং ব্যবস্থা ও সাপ্তাহিক ও মাসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখাবে আর পরীক্ষার প্রতি ভীতি দূর করবে। অন্যদিকে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চাহিদা বাড়ালেও বেসরকারি বিদ্যালয়ের রয়েছে নানা অনিয়ম। সামান্য দুই তিন জন শিক্ষক যারা স্নাতক পাশ ও কলেজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে ক্লাস করিয়ে নেন স্কুল মালিকেরা। কিন্তু অধিক পরিমাণে শিক্ষার্থী ভর্তি নিলেও বৈষম্যমূলক বেতন এবং কর্মঘণ্টা পার্টটাইম হলে করতে হয় ফুলটাইম শিক্ষকদের এছাড়াও নানা সমস্যায় জর্জরিত। দেশে প্রত্যেকটা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারের নিবন্ধনের আওতায় এনে শ্রেণিকক্ষকে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ দিতে এবং শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্য দূরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। মাদ্রাসা শিক্ষা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু এটি হচ্ছে সবচেয়ে অবহেলিত একটি।সেক্টর। যথাযথ তদারকির অভাবে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন আর নানা সমস্যা যেমনম: অবকাঠামোগত সমস্যা, শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা, শিক্ষার পরিবেশের অভাব পাশাপাশি শিক্ষকদের  বেতন যা আজকের এই মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতিতে অমানবিক। মেধাবীরাও এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যা উদ্বেগজনক। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সম্মেলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ইবতেদায়ী শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হবে জনসাধারণ। নাম: আফিফা জাহান পুষ্প ডিপার্টমেন্ট টেলিভিশন ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি ই-মেইল: jahanafia44@gmail.com

কলাম