শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ এ ১০:১৫:০৭ AM
লেখক: নাম : জান্নাতুল নাঈম প্রতিষ্ঠান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশন :২০২৩-২৪ বিভাগ : ইংরেজি বর্ষ : ১ম মোবাইল নাম্বার : 01648863226 ইমেইল :nayemnadia2004@gmail.com
আজকের দারুণ প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে মানুষ অহরহ শিকার হচ্ছে মনোযোগহীনতা নামক কালকূট বিষের। অধ্যবসায় আর মনোযোগ যেখানে একজন শিক্ষানবিশের প্রধানতম হাতিয়ার সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মারপ্যাঁচে পড়ে মূল্যবান সময় বিক্রি করে মনোযোগ হারিয়ে তার দাম চুকাতে হচ্ছে ইদানীং-এর অধিকাংশ তরুণ প্রজন্মকে। চেষ্টা করেও অনলাইন দুনিয়ার মোহ-মায়া থেকে বের হতে পারছে না ভবিষ্যৎ পৃথিবী তৈরীর কারিগররা। কথায় আছে আজকের শিশুর মধ্যেই শায়িত আছে আগামী দিনের পিতা। ক্রমবর্ধমান বিশ্বায়নের ফলশ্রুতিতে শিশুরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষত অত্যধিক মুঠোফোনের ব্যবহার তাদের মস্তিষ্কের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, সৃষ্টি করছে একটি ঘরবন্দি প্রজন্ম, চূড়ান্তভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিশু-কিশোরদের সামাজিকীকরণ। আজকাল বেশিরভাগ শিক্ষিত এবং একক পরিবারগুলোতেই মুঠোফোনসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি দেখা যাচ্ছে। শিক্ষিত ও কর্মজীবী মায়েরা সন্তানদের গুনগত সময় দিতে না পেরে তাদের হাতে তুলে দেন সর্বনাশা বিস্তৃত অনলাইন জগৎ। হাতের মুঠোয় গোটা দুনিয়া পেয়ে শিশু ভুলে যায় তার প্রাত্যহিক জীবন-যাত্রা, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া আর মানবীয় আন্তঃসম্পর্ক রক্ষায় তার যে ভূমিকা আছে সে অবধারিত ভূমিকার কথা। এভাবেই ব্যাহত হয় সামষ্টিক জীবন। অন্তর্জালে মনোযোগ ছিনতাই কোনো আকস্মিক ঘটনা নয় বরং ব্যক্তির ভবিষ্যতকে দোলাচলে রাখা হরহামেশাই ঘটমান একটি সময়সংহারক প্রক্রিয়া। আজকের প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে জটিল বিশ্লেষণী ক্ষমতাসম্পন্ন মানব মস্তিষ্কের ব্যাপক চাহিদাসত্ত্বেও অধিকাংশ সম্ভাবনায় ভরপুর তরুণ নিজেদের অফুরন্ত সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে অন্তর্জালের নেতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে। সমাজ ও দেশের এই অধোগতি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। চলমান প্রজন্মকে আরো গতিশীল, প্রাণবন্ত ও জীবন-জগতের প্রতি অধিকতর সংবেদনশীল ও অন্তর্মুখী হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের ফিরে যেতে হবে সামাজিকতার অতীত হাতিয়ারগুলোর অপেক্ষাকৃত চৌকশ ব্যবহারে। একটি সুস্থ, সুন্দর আর গঠনমূলক আগামী বিনির্মাণে রাষ্ট্র চায় সুনাগরিকরা তাদের দায়িত্ব অকুণ্ঠচিত্তে পালন করুক, পাশাপাশি নাগরিকবৃন্দের প্রত্যাশা থাকে রাষ্ট্র তার সমস্ত হাতিয়ারযন্ত্র ব্যবহার করে স্ব স্ব দেশকে একটি শ্রেষ্ঠ জাতিতে রূপান্তরিত করবে। এভাবে রাষ্ট্র ও নাগরিকের পারস্পরিক লেনা-দেনা আর নিজ অবস্থান থেকে সততার সাথে নিজ ভূমিকা পালনই পারে সুন্দর আগামীর নির্মাণ।
কলাম